রাণী ভিক্টোরিয়ার আমলে ভূমি বন্দোবস্ত (১৮৫৭-১৯৪৭)
পরবর্তীকালে খলিলুর রহমান তালুকের অংশীদারদের উত্তরাধিকার বা বেনেফিশিয়ারগণ হাসনাবাদ মৌজায় আমীরগঞ্জ বা হাসনাবাদ বাজারের মূল অংশ তিনজন ভূমধ্যধিকারীর নিকট কবুলত পাট্টা দেন। পূর্বোক্ত হাসনাবাদ বাজারস্থ তিনটি সিএস পর্চার খতিয়ান নং যথাক্রমে ৩৭৫, ৩৭৬, ৩৭৭। সিএস পর্চার ক্রমানুসারে এই তিনটি ভূমধ্যধিকারীগণ হলেন (খতিয়ানের ক্রমানুযায়ী) আমীরগঞ্জের সোনা উল্লাহ ভূঁইয়া (পিতা : কোবাদ ভূঁইয়া), রহিমাবাদের হরচন্দ্র সাহা (পিতা : কিশোর সাহা) ও আমীরগঞ্জের সদর উদ্দিন বেপারী (পিতা : আছান উল্লাহ বেপারী)। খলিলুর রহমান তালুকের পশ্চিম অংশ, আড়িয়াল খাঁ নদের তীরঘেঁষা বর্তমান আমীরগঞ্জ ও বৃহত্তম করিমগঞ্জ, ১৩১৭৩ নং মহালটিকে রাজচন্দ্র কর্মকারের নিকট পত্তনী তালুক হিসেবে পত্তন দেয়া হয়। বর্তমানে উক্ত গ্রামদ্বয়ের সিএস পর্চা তার সাক্ষ্য বহন করছে। উল্লেখ্য, উপর্যুক্ত খলিলুর রহমানের খারেজী তালুকটি বিস্তৃত ছিলো আমীরগঞ্জের পূর্ব ও পশ্চিম চক করিমগঞ্জ, নলবাটা, আগানগর, হাসনাবাদ পূর্বপাড়া, পশ্চিমপাড়া, মীরকান্দি (বীরকান্দি), নেবুরকান্দি, আটকান্দি ও হাসনাবাদ বাজার পর্যন্ত। পরে আমার এক অনুসন্ধানে তার সঠিক ইতিহাস বের হয়ে আসে, যার বিস্তারিত বিবরণ সামনে পর্যায়ক্রমে আসবে। এ-সকল গ্রাম ছিলো খলিলুর রহমান তালুকের ৪ আনা ১০ গণ্ডার অংশ, যা জমিদার মরিয়ম বেগমের অংশ। অবশিষ্ট অংশ ছিলো অন্যান্য শরিকগণের। এখানে উল্লেখ্য যে, মৃত মরিয়ম বেগমের ১৩১৭৩ নং মহালের রায়ত ছিলেন পুটিয়ার রাম কুমার নাথ (ঠিকানা উল্লেখ করা হয়েছেÑ থানা : রায়পুরা, জেলা : নরসিংদী) নরসিংদী সদর উপজেলাধীন বীরপুরের রামারুদ্দিন, মুলকজান, রাধা গোবিন্দ সাহা ও হরি গোবিন্দ সাহা। বর্তমান এ-নিবন্ধ লেখার (১১ এপ্রিল ২০২২) খানিক পূর্বে আমার অগ্রজ জাকির ভাই (দলিল লেখক)-এর কল্যাণে আমাদের গ্রামের এক কৃষক পরিবার কর্তৃক জমিদারদের জমির খাজনা প্রদানের প্রমাণপত্র (প্রজার অংশ) দাখিলা আমার হস্তগত হয়। ২৪ আষাঢ় ১৩৬৫ বঙ্গাব্দ তারিখে আদায়কৃত ১৩৬০-৬১ বাংলা সনের খাজনার লিখিত দাখিলা পাঠে দেখা যায়, জিলা ঢাকা কালেক্টরির তৌজিভুক্ত ১৩১৭৩ নং মহাল, ১০ ওয়াকফ এস্টেট, থানা : রায়পুরা, ৩৭২ নং মৌজা হাসনাবাদ প্রকাশ রণভাওয়াল হিং ১, ষোল আনা মালিক দখলকার মোতোয়াল্লী মৌলভী মির্জ্জা মোহাম্মদ আশ্রাফ জমিদার সাহেব, সাকিন : ২৫ নং বড় কাটারা, থানা : লালবাগ, ঢাকা। উক্ত দাখিলায় মরিয়ম বেগম জমিদারির নিচে ব্র্যাকেটবন্দী খারিজা তালুকদার খলিলুর রহমানের নাম উল্লেখ আছে, প্রজার নাম ছমির খা (পিতা : মৃত আমির খাঁ, গ্রাম : আমীরগঞ্জ। দাখিলায় যার মাধ্যমে খাজনা প্রদান করা হয়েছে, তার দস্তখতে নাম লিখা আছে রুকুন উদ্দিন খাঁ (পিতা : ছমির খা)। সেই হিসেবে রুকুন উদ্দিন খাঁ’র সাথে দাখিলার সত্যতা নিয়ে আমার সাথে কয়েকবার আলাপচারিতা হয়। তিনি জানান, তিনি নিজে এই স্বাক্ষর দিয়েছেন এবং মির্জা মোহাম্মদ আশ্রাফকে স্বচক্ষে দেখেছেন। এটি পাওয়ার পর আমার এ-জনপদের পূর্বের জমিদার ও তালুকদারদের ধারণা পাল্টে যায় এবং আমি এ-জনপদের ভূমি মালিকানা ইতিহাসের এক তমসাচ্ছন্ন অধ্যায়ে পড়ি। ভাবতে থাকি, কে কার থেকে পত্তনী নিয়েছেন? এই জনপদের সিএস পর্চায় উল্লেখিত রাজচন্দ্র কর্মকার কার থেকে পত্তনী নিয়েছেন? কারণ, দাখিলা পাঠে জানা যায় যে, এ-জনপদ ঢাকা (২৫ নং বড় কাটারা, থানা : লালবাগ) নিবাসী মুঘল অমাত্যের বংশধর মরিয়ম বেগমের ওয়াকফ এস্টেট এবং এই মরিয়ম বেগম ওয়াকফ এস্টেটের সর্বশেষ মোতয়াল্লী ও মালিক হলেন মির্জা মোহাম্মদ আশ্রাফ। কয়েক বছর পূর্বে আমার চাচাতো ভাই জনাব কাঞ্চনের কাছে স্থানীয় জমিদারদের নাম জানতে চাইলে তিনি ঢাকার লালবাগের এক মির্জা আলীর নাম বলেন, যিনি আমীরগঞ্জে আগমন করতেন মরিয়ম বিবির মাজারের বাতি খরচ নিতে। কাঞ্চন ভাই তার পিতা রমিজ উদ্দিন মুন্সির সাথে বালক বয়সে এই মির্জাকে সিকদার বাড়ি (বর্তমান চুন্নু ও ইকবাল ভাইদের বাড়ি), বড় বাড়ি (সদু বেপারীর বাড়ি) ও খাঁ বাড়িতে দেখতে পেয়েছেন। দাখিলা পাঠের পর প্রাচীন ঢাকার উল্লিখিত ঠিকানায় সফর করার ইচ্ছে জাগে। কিন্তু সরকারি চাকরি ও আমার অসুস্থতা এই সফরের প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়ায়। গত ১ এপ্রিল ২০২২ তারিখের কয়েক সপ্তাহ পূর্বে আমি ২৫ নং বড় কাটারা সফর করি এবং জমিদার মির্জা মোহাম্মদ আশ্রাফের খান্দানের সত্যতা পাই এবং তাঁর পুত্র-কন্যাদের নাম-ঠিকানা সংগ্রহ করি। আরো জানতে পারি যে, ২৫ নং বড় কাটারা, জমিদার মির্জা মোহাম্মদ আশ্রাফের বসত বাড়িটি ও তার পাশের ভিটি ১৯৮৬ সালে হাজী মোহাম্মদ সেলিম (একসময়ের বিএনপির এমপি, পরবর্তীতে আওয়ামী লীগের এমপি) কমিশনার থাকাবস্থায় খরিদ করে নিয়েছেন, যা বর্তমানে ৩০ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়। গত ১ এপ্রিল ২০২২ তারিখে বিকাল ৪ ঘটিকায় মরিয়ম বিবি ওয়াকফ এস্টেটের মোতোয়াল্লী মির্জা মোহাম্মদ আশ্রাফের ছেলে মির্জা নেহালের সাথে দেখা হয় এবং তার সাথে মরিয়ম বিবির জমিদারি ও ওয়াকফ এস্টেট নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয় এবং তিনি মরিয়ম বিবির জমিদারি ও ওয়াকফ এস্টেটের প্রায় সমস্ত দালিলিক প্রমাণাদির ফটোকপি আমাকে দেন। উক্ত প্রমাণাদি প্রাপ্তির পর উক্ত জনপদে জমিদারি ও তালুকদারির ইতিহাস আমাকে নতুন করে লিখতে হচ্ছে। প্রমাণাদি পর্যালোচনা করে অবগত হওয়া যায় যে, আমাদের এই জনপদসহ অন্যান্য স্থানের জমিদার ছিলেন মরিয়ম বেগম, যার ঢাকা কালেক্টরির তৌজি নং ৯৯৬৫ (সদর জমা ছিলো ১৭১৯ টাকা)। তবে রায়পুরার কয়েকটি ইউনিয়নে আমির উদ্দিন হায়দার ও মরিয়ম বেগমের যৌথ জমিদারি ছিলো। গুগলক্রমে বরদাখাত (ত্রিপুরার একটি পরগণার নাম) লিখে সার্চ দিলে একটি ফিচার আসে, সেখানে উপরে লেখা আছে, গভর্নমেন্ট গেজেট ১৮৯৪ সাল ১৩ই মার্চ এবং মরিয়ম বিবি হিং। ১৫ (চার আনা ১৫ গণ্ডা) পরগণা রণভাওয়াল, তৌজি নং ৯৯৬৫ নং জমিদারির অংশ দেখতে পাওয়া যায়। এই মরিয়ম বিবির জমিদারি বিভিন্ন জেলায়, বিভিন্ন পরগণায় তালুক অবস্থান ছিলো। যেমন : সাবেক ত্রিপুরা হালে কুমিল্লার হোমনা, মুরাদনগর ও দাউদকান্দি, সাবেক ফরিদপুর জেলার বেদেরগঞ্জ, সাবেক ত্রিপুরা জেলার হালে নারায়ণগঞ্জ জেলার বৈদ্যের বাজার, বর্তমান নরসিংদীর সাটিরপাড়ার তালুকদারের (সাটিরপাড়া বয়েজ ও গার্লস স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা ললিতমোহন রায় গং)-এর ঢাকা জিলার কেরানীগঞ্জের ২৭৬ নং তালুক, ঈশানচন্দ্র পাল গংয়ের ২৭৩ নং তালুক, মৌলভী আলীমুদ্দিন আহম্মদের ২৭৪ ও ২৭৭ নং তালুক, মৌলভী আবু আহাম্মদ আবদুল বাছেদের (যিনি মৌলভী আলীমুদ্দিনের পুত্র) ২৭৫ নং তালুক, আছমতন্নেছার ২৭৮ নং তালুকসহ সবই তপ্পা রণভাওয়াল পরগণাস্থিত, যার ভূমির অবস্থান ছিলো ঢাকা কেরানীগঞ্জ থানার ২৭৯ নং কামারঘোপ মৌজাস্থÑ এ-সকল ভূমিই মরিয়ম বিবির জমিদারি থেকে বন্দোবস্ত নেওয়া। জাহাঙ্গীরনগর পরগণার লালবাগ থানার লাখেরাজ এস্টেট, যার একজন মধ্যস্বত্বাধিকারী ছিলেন রায় আনন্দলোচন মিত্র, যা মরিয়ম বিবি ভারত সম্রাট থেকে লাখেরাজ সম্পত্তি হিসেবে বংশ পরস্পরায় মালিক হয়েছিলেন। এ-জনপদের পূর্বোক্ত আরেকজন তালুকদার ছিলেন, যার নাম খলিলুর রহমান। তার তালুকটি খারেজী তালুক ছিলো, যা অন্য কোনো বৃহৎ তালুক থেকে বের হয়ে নতুন মালিকানা সৃষ্টি হওয়াকে বোঝায়। এ-তালুকের অবস্থান ও জোত কবুলতদের বাসস্থান ছিলো বর্তমান রায়পুরা থানার আমীরগঞ্জ (বর্তমানে লেখকের জন্মস্থান) বৃহত্তর করিমগঞ্জ, হাসনাবাদ ও হাসনাবাদ বাজার, নলবাটা, আগানগর, মির্জানগর, আটকান্দি, চরসুবুদ্ধি, হাইরমারা ইউনিয়নসহ বীরকান্দি, মেহেন্নাঘর, আদিয়াবাদ, খাস উল্লাহ, পুটিয়া ও বীরপুরে (নরসিংদী)। খলিলুর রহমান তালুকের ঢাকা কালেক্টরির তৌজি নং ৯৯৫৪ এবং তার (খারেজী তালুক খলিলুর রহমান), যার সদর জমা ২১০ টাকা। এ-তালুকে হাসনাবাদ মৌজাস্থ আরেকটি ঈশানচন্দ্র পালের ১০৪ নং মধ্যস্বত্ব দেখতে পাই, যার জোতের মালিক ছিলেন সোনা গাজী এবং দখলদার নাম হরিচরণ নাথ (পিতা : মৃত স্বরূপ নাথ)। এই খারেজী তালুকটি বিভিন্ন মহালে যেমন : ১৩১৭৩, ১৫৭৮৩ ও ১৫৭৮৪-এ বিভক্ত ছিলো। উক্ত তালুকের চার আনা ১০ গণ্ডার মালিক ছিলেন এই মরিয়ম বিবি। উপর্যুক্ত পরগণায় বিভিন্ন তালুক নিয়ে গঠিত ছিলো মরিয়ম বিবির জমিদারি।
কে এই জমিদার মরিয়ম বেগম
মরিয়ম বেগমের পিতার নাম জানা না গেলেও তার এক ভাইয়ের নাম ছিলো ইয়াদ ওয়ারেছ। তিনি মীর গোলাম হোসেনের পিতা ছিলেন। মরিয়ম বেগমের স্বামীর নাম সৈয়দ আলী মেহেন্দী খাঁ বাহাদুর, মেয়ের নাম খায়রুন নেছা ওরফে নতে বেগম এবং খায়রুন নেছার স্বামীর নাম মীর গোলাম হোসেন। খায়রুন নেছার কন্যার নাম মরিয়ম নেছা বেগম। উল্লেখ্য যে, এখানে দুইজন মরিয়মের নাম পাওয়া যায়, যার একজন হলেন জমিদার মরিয়ম বেগম এবং অপরজন জমিদার মরিয়ম বেগমের মেয়ের ঘরের নাতনি মরিয়ম নেছা বেগম। মরিয়ম নেছা বেগমের নিজ বসতির ঠিকানা ওয়াকফ ও মীর গোলাম হোসেন কর্তৃক মির্জা মোহাম্মদের নিকট বিক্রিত দলিলে নিম্নোক্তভাবে উল্লেখ করা হইয়াছে :
“ঢাকা জেলার সদর পুলিশ স্টেশন মহালে চাঁদখার পোল স্থিত মৃত মরিয়ম নেছা বেগমের নিজ বসতি ভাদ্রাসন বাড়িময় নিষ্কর ভূমি তাহার চৌহদ্দি পশ্চিমে সড়ক দক্ষিণে কুচা রাস্তা উত্তরে মহালে আলি নকিছ ডেউরী স্থিত লাখেরাজ জমি পূর্বে মৃত ফজলে মিরনের জমিন।”
সহোদর ভ্রাতার পুত্র ও কন্যা খায়রুন নেছার স্বামী জনাব মীর গোলাম হোসেনকে মোতাওয়াল্লী নিযুক্ত করেন এবং উল্লিখিত ওয়াকফকৃত সম্পত্তির নিকট উপস্বত্ব হইতে সুবিধাপ্রাপ্ত হিসেবে তার ঘনিষ্ট আত্মীয় কতিপয় ব্যক্তিদিগের পুত্র, পৌত্রাদি ও ওয়ারিশানক্রমে মাসিক ৭৮ টাকা হিসেবে বার্ষিক ৯৩৬ টাকা এবং অপর কয়েক আশ্রিত ব্যক্তিকে তাদের জীবদ্দশা পর্যন্ত মাসিক ৫ টাকা হিসেবে বার্ষিক ৬০ টাকাসহ মোট ৯৯৬ টাকা খোরপোষ দেওয়ার নিয়ম অবধারিত করেন। ঐ-সম্পত্তির নিট লাভ হতে যা উদ্বৃত্ত হবে, তা দ্বারা ওয়াকফকারীর (মরিয়ম বেগম) বসতবাড়ি স্থিত ইমামবাড়া (শিয়া মুসলিমদের প্রধান এবাদতখানা হোসেনী দালান)-এর খরচ হবে মর্মে শর্তে উল্লেখ করেন। কিন্তু বঙ্গাব্দ ১২৭৪ সনের মাঘ মাসে মরিয়ম বেগমের মৃত্যু হওয়ার পর ৯৯৫৪ নং তালুক ঢাকা কালেক্টরির অফিস কর্তৃক বণ্টন হয়ে কথিত একরভুক্ত চার আনা ১০ গণ্ডা অংশের বাবদ স্বতন্ত্র একটি ছাহাম হয়ে ১৩১৭৩ নং তৌজি সৃষ্টি হয়েছে, যাতে আমীরগঞ্জ ও করিমগঞ্জের গ্রাম ও চকের জমিগুলিও উল্লেখ দেখতে পাওয়া যায়। উক্ত সৃজিত মহাল বা তালুকের বার্ষিক ৫৯৮ টাকা সদর জমা ধার্য এক মহাল সৃষ্টি হয়েছে। এটি ছাড়া এই তালুকে ১৫৭৮৩ ও ১৫৭৮৪ নং আরো দুইটি ভিন্ন মহাল বা তৌজি সৃষ্টি হয়। মরিয়ম বেগমের মৃত্যুর ওয়াকফের মোতাওয়াল্লী জনাব মীর গোলাম হোসেন বাংলা ১৩০৮ সনের ২১শে অগ্রহায়ণ ১৯০১ সালের ৭ই ডিসেম্বর তারিখে সম্পাদিত ৩৩ ফর্দে এক সাফকাবলা ওয়াকফ দলিলে উল্লেখিত মরিয়ম বেগমের জমিদারি ও খলিলুর রহমানের তালুকের তার স্বত্ব (মীর গোলাম হোসেনের), মরিয়ম বেগমের কন্যা খায়রুন নেছার হেবায় প্রাপ্ত সম্পত্তি, ফরাজে ও লাখেরাজ ভূমি ও পত্তনী মালিকানা মির্জা মোহাম্মদ, পিতা : মির্জা কাজিম ও মির্জা মোহাম্মদের আপন বোন জনাবা বনি বেগমের (মীর গোলাম হোসেনের ভাগনি) নিকট বিক্রয় করে নিস্বত্ববান হন। তখন ভূমি রেজিস্ট্রেশন আইন ১৯০৮ প্রণীত হয় নাই বিধায় ১৮৮২ খ্রিস্টাব্দের সম্পত্তি হস্তান্তর আইন মোতাবেক দলিল লেখক শ্রী জজ্ঞেশ্বর দত্ত সাং হাল ঢাকা কবিরাজের গল্লি, স্টেশন সদর, ঢাকা ও আপন সাকিন বা স্থায়ী ঠিকানা : টিন কোর্ট স্টেশন শ্রীনগর ৩৬০৪ নং (মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর) এবং দলিলটি দুই টাকা মাত্র স্ট্যাম্পে প্রহলদ চন্দ্র ধর বেন্ডার কাঃ আদালতে জিলা : ঢাকা মির গোলাম হোসেনের সহি-স্বাক্ষরে ৩৩ ফর্দের আঠারো পাতার সাফকাবলা দলিল সংগঠিত হয়। আমার নিকট উক্ত দলিলের একটি ছায়ালিপি রক্ষিত আছে, যার চৌম্বক অংশ পরবর্তী পর্বে তুলে ধরা হবে।
আমির হোসেন
গবেষক, আয়কর পরিদর্শক